ধর্মগুরুদের কথা কেন বিচারপতি-সরকার প্রধানের মুখে!
শিশির ভট্টাচার্য্য: প্রধান বিচারপতি সম্প্রতি বলেছেন, আপনারা অন্যের ধর্মপালনে বাধা দেবেন না, কারণ অমুক ধর্মে এবং অমুক সনদে এ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কথাটা অবান্তর, কারণ প্রথমত, চোরা না শুনে ধর্মের কাহিনী, দ্বিতীয়ত, যে কোনো ধর্মেই প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে অন্য ধর্মের লোকদের আক্রমণ করার কথাও বলা আছে, খুঁজলেই পাওয়া যাবে।
তৃতীয়ত, ধর্ম-বর্ণ-জাতি-গোষ্ঠী-বিশ্বাস নির্বিশেষে গঠিত একটি রাষ্ট্রে সবারই নিজ নিজ ধর্ম পালন করার অধিকার থাকে, আছে। রাষ্ট্রের নাগরিক মাত্রেই এই সংবিধান মানতে বাধ্য। সুতরাং আপনি মূর্তি ভাঙবেন না, নিজের ধর্ম পালনের অজুহাতে প্রার্থনার আহ্বান কিংবা পূজার মন্ত্রোচ্চারণের অজুহাতে অতিরিক্ত শব্দ সৃষ্টি করে অন্য নাগরিকের কান ঝালাপালা করবেন না, কারণ বাংলাদেশের সংবিধান অনুসারে এই কাজগুলো অপরাধ।
বিচারপতি এমন অপরাধের শাস্তি দেবেন এবং সরকার প্রধান সেই শাস্তি কার্যকর করবেন — এ টুকু নিশ্চিত করাই রাষ্ট্রের জন্য যথেষ্ট। রাষ্ট্র কোনো ধর্ম বা ঐতিহাসিক সনদ অনুসারে চলে না, সংবিধান অনুসারে চলে। যে কথা ধর্মগুরুদের বলার কথা, সে কথা যখন বিচারপতি এবং সরকার প্রধানের মুখে ‘শোভা পায়’, তখন সন্দেহ হয়, নিজেদের প্রকৃত কর্তব্য সম্পর্কে তাঁরা আদৌ ওয়াকেবহাল কিনা।
*লেখকের ফেসবুক পোষ্ট