ধর্ম বিদ্বেষ আর অসাম্প্রদায়িকতা
শোয়েব সাঈদ: মানব চরিত্রের এই দুই পটভূমির অবস্থান ভিন্ন মেরুতে। এদের সহাবস্থান সম্ভব নয় যেমনটা two opposite things can’t successful at a time.
আজকাল চারিদিকে মৌলবাদ, কি আস্তিকতায় কি নাস্তিকতায়। এর বাইরে আরেকটি গ্রুপ আছে পরিচয় সংকটে বিভ্রান্ত। দিনটাই এদের শুরু হয় ধর্ম বিদ্বেষের লেলিহান শিখা নিয়ে। বুদ্ধিভিত্তিক চর্চায় বাইপোলার কিছু মানুষ আবার উনাদের হাততালি যোগায়।
যে ধর্মের উপর বিদ্বেষ তার প্রতি ঘৃণা ছড়াতে এরা নাস্তিকতার নামভূমিকায়, আবার প্রিয় ধর্মের প্রতি প্রীতি প্রকাশে এরা নির্ভর করে স্ত্রীর উপর, স্ত্রীর পছন্দ তাই নাস্তিক হয়েও যেতে হয় আর কি!
আজকাল সামাজিক মাধ্যম মানব চরিত্রের সিসি ক্যামারা, নিজেকে যাই ভাবুননা কেন মন মানসিকতার আসল রূপটি কলংকিত পঙ্কিলতায় বের হয়ে আসবেই। আপনার সামাজিক মাধ্যমের হিস্ট্রি অধ্যায়টি নির্মোহ নির্মমতায় সাক্ষ্য হয়ে আছে কিন্তু। আপনার চতুরতা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমের বন্ধুদের কোন দ্বিমত নেই।
বিদ্বেষ পোষণ করা ধর্মকে ৯৯ টা গালি দিয়ে ব্যালান্স করার হীন চেষ্টায় জন্ম নেওয়া ধর্মকে একটা গালি দিতেই যে হয়।
লড়াইটা যদি মৌলবাদের বিরুদ্ধে হয়, আপনার জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় আমরা আকৃষ্ট হব, যুক্তিতে মুগ্ধ হব।কিন্তু আপনার টোকাই মার্কা লড়াইটা তো ভুল জায়গায়, আপনি ধর্মটাকে আঘাত করতে গিয়ে নিজেই জঙ্গিবাদের সৈনিক হয়ে যাচ্ছেন, উস্কে দিচ্ছেন সাম্প্রদায়িকতার অগ্নিকুণ্ড।
ধর্ম বিদ্বেষে আপনি বিপুল সময় ব্যয় করছেন, অন্য ধর্মে জন্ম নেওয়া আপনার স্কুল থেকে আজতক এমন কোন বন্ধু কি পাবেন আপনার জন্ম নেওয়া ধর্ম নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে কোন প্রকার নেগেটিভ মন্তব্য দিতে?
নাস্তিক হয়ে আস্তিকদের ধোলাই প্রকল্পে একটি নির্দিষ্ট ধর্ম বিদ্বেষে আপনার আসক্তি দিনশেষে আপনার মারমুখী ধার্মিক পরিচয়টিকে কিন্তু সামনে নিয়ে আসছে।
ভাবতে অবাক লাগে অন্যের ধর্ম নিয়ে কুরুচিপূর্ণ আলোচনায় ইচ্ছে জাগে কেমন করে? জায়নামাজে বসে কিংবা তুলসীতলায় পুজো দিয়ে কিংবা যীশুর ছবির সামনে গিয়ে দিনের শুরু যে মায়ের, তাঁর এই বিশ্বাসকে আঘাত করার ইচ্ছে হয় কেমন করে?
যে নাস্তিক অসাম্প্রদায়িক তাঁর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। যে আস্তিক অসাম্প্রদায়িক তাঁর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধার মাত্রাটি যে অনেক বেশী। নিজ বিশ্বাসের স্থির থেকে অন্যের বিশ্বাসের উপর শ্রদ্ধাশীল মানুষ মানব সভ্যতার সম্পদ বটে।
লেখকের ফেসবুক থেকে