আসলেই কী দুর্ভিক্ষ আসছে!
শওগাত আলী সাগর : ’ এখন আর পৃথিবীর কোথাও দুর্ভিক্ষ হবে না’- এমন একটা কথা কখন কীভাবে মাথায় ঢুকে আছে, ঠিক মনে করতে পারছি না।তবে আমি এখনো বিশ্বাস করি, এখন আর কোনো দেশে দুর্ভিক্ষ হবে না।অনাহারে মানুষ মারা যাবে না- এটাও আমার বিশ্বাসের মধ্যে আছে।
তবে এটা সত্য, সামনের দিনগুলোয় অর্থনীতির উপর চাপ আরো বাড়বে।সেই চাপ জনজীবনকে প্রবলভাবে প্রভাবিত করবে।
জাতিসংঘের বিশ্বখাদ্য সংস্থা- ’ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা আরো বাড়বে, খাবারের সংকট আরো তীব্র হব ‘- বলে পূর্বাভাস দিচ্ছে। তাদের হিসেবে ৮২৮ মিলিয়ন মানুষ প্রতিরাতে অভূক্ত অবস্থায় ঘুমাতে যায়,এদের মধ্যে ৩৪৫ মিলিয়ন মানুষের সংকট অত্যন্ত তীব্র। ২০১৯ সালেও এই তীব্র খাদ্য সংকটে থাকা মানুষের সংখ্যা ছিলো ১৩৫ মিলিয়ন। ৪৫টি দেশের ৫০ মিলিয়ন মানুষ একেবারে দুর্ভিক্ষ ছুঁই ছুঁই অবস্থায় আছে।
খাদ্য নিয়ে সামনে সংকট অবশ্যই আছে, সরবরাহ ব্যবস্থার সংকট, খাদ্য উৎপাদনে ঘাটতি, কোনো কোনো দেশে বন্যা, খরা- এগুলো পর্যাপ্ত খাদ্য প্রাপ্তিকে ব্যহত করছে। বিশ্ববাজারে খাদ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে। খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি থামাতে নানা দেশ নানা ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
জাতিসংঘের খাদ্য এবং কৃষি সংস্থা(এফ এ ও) ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী ( ডব্লিউ এফপি) যৌথভাবে ১৯টি দেশকে ‘হাঙ্গার স্পট’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তার মধ্যে আফগানিস্তান, পাকিস্তান আছে। তবে ‘হাঙ্গার স্পট’ বা খাদ্য নিয়ে সংকটে পরার সম্ভাবনা আছে যে দেশগুলোর, সেই সব তালিকায় বাংলাদেশের নাম এখন পর্যন্ত উচ্চারিত হয়েছে বলে কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর আলোচনায় ‘বাংলাদেশে খাদ্য সংকট কিংবা দুর্ভিক্ষ হতে পারে’- এমন কোনো বক্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি।
তবে বহির্বিশ্বের একটি দেশের সংকটের ঢেউ অন্যদেশকেও স্পর্শ করে। বর্তমানের অর্থনীতির মন্দাবস্থা বাংলাদেশকে স্পর্শ করবে না বা ঝুঁকি দেবে না- তা ভাববার কারন নেই।
লেখক: শওগাত আলী সাগর, প্রধান সম্পাদক, নতুনদেশ।