পাসপোর্ট জমা নেয়া নিয়ে সৌদি দূতাবাস- বায়রা মতবিরোধ
নতুনদেশ ডটকম: সৌদিগামী কর্মীদের পাসপোর্ট জমা নেয়া নিয়ে ঢাকায় সৌদি দূতাবাস আর রিক্রুটিং এজেন্টদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। দূতাবাস বলেছে- এখন থেকে তারা আর সরাসরি রিক্রুটিং এজেন্টদের কাছ থেকে বাংলাদেশি কর্মীদের পাসপোর্ট জমা নেবে না। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পাসপোর্ট জমা নেয়ার সিদ্দান্ত নিয়েছে তারা। কিন্তু রিক্রুটিং এজেন্টরা সেই সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ।
ঘোষণা অনুযায়ী ১৫ অক্টোবর থেকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান শাপলা সেন্টারের মাধ্যমে পাসপোর্ট জমা নেয়ার কথা। কিন্তু সৌদি কর্তৃপক্ষের নেয়া এ সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি তুলেছে বাংলাদেশি জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বায়রা।শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে এক জরুরি সভা শেষে বায়রা সভাপতি মোহাম্মদ আবুল বাশার বলেন, ‘যদি সৌদি দূতাবাস তাদের সিদ্ধান্ত বাতিল না করে, তাহলে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে রোববার থেকে আমরা সৌদি আরব দূতাবাসে কোনো পাসপোর্ট জমা দেব না।’
ঢাকা থেকে প্রকাশিত বাংলা পত্রিকা দৈনিক বাংলা জানায়, বায়রা সভাপতির অভিযোগ, শাপলা সেন্টার চালু করে রিক্রুটিং এজেন্টদের ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা চলছে। এখানে কারও না কারও কিছু উদ্দেশ্য আছে। তিনি বলেন, ‘সৌদি আরব শুধু বাংলাদেশ থেকে লোক নেয় না, ভারত, ইন্দোনেশিয়া থেকেও নেয়। ভারতেও তারা তৃতীয় পক্ষ দিয়ে পাসপোর্ট সংগ্রহ ও ভিসা স্ট্যাম্পিংয়ের কাজ করাতে চেয়েছিল। কিন্তু সব রিক্রুটিং এজেন্সি মালিক মিলে তাদের কাছ থেকে সরাসরি পাসপোর্ট নিতে বাধ্য করেছিল। যদি ভারত পারে, বাংলাদেশ কেন নয়?’
বাশার বলেন, ‘যদি মানুষের জটলাসংক্রান্ত সমস্যা হয়, তাহলে আমাদের বায়রার ওপর ছেড়ে দেন। আমরা আপনাদের পছন্দ মতো জায়গায় নিজেদের খরচে জায়গা তৈরি করে আমাদের সদস্যদের জন্য কাজটি করতে চাই। এই প্রস্তাব আমরা দূতাবাসের কাউন্সিলরের কাছে দিয়েছি। তিনি কোনো জবাব দেননি।’
বায়রা সদস্যদের অভিযোগ, শাপলা সেন্টার মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের মতো সৌদি আরবের শ্রমবাজারেও ‘সিন্ডিকেট তৈরির একটি অপচেষ্টা’।
তারা বলছে, এখন প্রত্যেকটি এজেন্সি কোনো প্রকার ফি ছাড়াই সরাসরি সৌদি দূতাবাসে কর্মীদের পাসপোর্ট জমা দিতে পারে। কিন্তু তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে তা হলে বেসরকারি ফার্ম একটি ফি নেবে, তাতে অভিবাসন খরচ বেড়ে যাবে।
শাপলা সেন্টারের সঙ্গে বায়রার সহসভাপতি নোমান চৌধুরীর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও সংগঠনের সদস্যদের মধ্য থেকে উঠেছে। তবে সে অভিযোগ অস্বীকার করে সভায় নোমান বলেন, ‘আপনাদের কাছে কোনো দালিলিক প্রমাণ আছে? আপনারা কি কোনো নথিতে আমার নাম দেখেছেন? আমি গত সপ্তাহে দেশের বাইরে ছিলাম। একটা সাদা কাগজে ২৫-২৬টা নাম ঘুরছিল। একটা সাদা কাগজে নাম দেখা মানেই কি আমরা সম্পৃক্ত? আমি কোনো কিছুর সঙ্গে জড়িত নই। আমি যদি জড়িত থাকি বা আমার পরিবারের কেউ জড়িত থাকে, আমি পদত্যাগ করব।’
সহসভাপতি নোমান চৌধুরীর নাম উঠে আসা নিয়ে সভাপতি বলেন, ‘যদি নোমানের সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ পাই বা বায়রার অন্য কোনো সদস্য এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত আছে প্রমাণ পাই, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করব। কমিটির কোনো সদস্য জড়িত থাকলে পদত্যাগ করে আপনাদের দরবারে হাজির করে দেব। যদি বায়রার স্বার্থ কেউ নষ্ট করতে চায়, তাকে ইসি কমিটি থেকে বাতিল করতে পারব।’
সৌদি আরব বাংলাদেশের কর্মীদের জন্য সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার। বাংলাদেশ থেকে যত কর্মী বিদেশে পাঠানো হয় তার মধ্যে ৩২ শতাংশই যায় মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে। বাংলাদেশে আসা মোট রেমিটেন্সের ২০ শতাংশের বেশি আসে সৌদি থেকে।