Sat, May 23, 2020 3:29 PM
আহমেদ হোসেন: প্রথমে ধিক্কার জানাই এই নাশকতামূলক, বর্বরোচিত, ঘৃনিত কর্মকাণ্ডের জন্যে।
অতি সাম্প্রতিক শাহ আবদুল করীম এর শিষ্য রণেশ ঠাকুরের ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে দুষ্কৃতকারীগন। রাগে ক্ষোভে কিছু না করতে পারার যন্ত্রণায় আকুল ব্যথায় হৃদয় ভেঙ্গে একাকার অনেকের মতো আমারও। সেদিনই বিচার দাবি করেছি। দ্রুত দোষীদের আটক করে দ্রুত বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
বাউল রণেশ ঠাকুর জানে না কে করেছে। আমি আপনি জানি না কে করেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ওস্তাদ আলাউদ্দিন আলী খাঁ বাড়িতে আগুন লাগিয়ে বাদ্যযন্ত্র পুড়িয়ে ফেলার সাথে এর নিশ্চিত মিল আছে । এই অপকর্ম আকাশ থেকে কেউ এসে করেনি। আমাদের আশেপাশের কেউ না কেউ করেছে এবং তারাই করেছে যারা চায় না বাঙালির শাশ্বত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বেঁচে থাক। চায় না আউল বাউলেরা গান বাঁধুক গ্রামে গ্রামে। হয়তো এর মধ্যে কারো আছে বাউলের জমির প্রতি লোভ। কারো ইচ্ছে জল ঘোলা করার। কারো কারো ইচ্ছে শুধু গ্রামে গ্রামে মাদ্রাসা আর মসজিদ থাক। না থাক মন্দির না থাক প্যাগোডা বা গির্জা। আমি বাউল হলে আমার স্থান নেই গ্রামে কিংবা শহরে। চাহে তো নেই আবাস দেশের মাটিতে। তাই কি! না তা সত্য নয়। এক্কেবারে না। যদিও ".. যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশি আজ চোখে দ্যাখে তারা; "।
যাই হোক, আশার কথা, প্রতিবাদ হয়েছে। প্রতিবাদ হচ্ছে। প্রশাসন এগিয়ে এসেছে। জেলা প্রশাসক বাড়ি নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অর্থ সাহায্য দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী
কর্মকর্তা। আমেরিকা প্রবাসী একজন বাড়ি করে দেবার অঙ্গিকার করেছেন। বাউলের জন্যে অর্থ তোলা হচ্ছে এখন। হাজার দুই ইতিমধ্যে জমা পড়েছে। আরোও আসবে।
এক্ষণে, বলিষ্ঠভাবে বলতে চাই দুই রুমের একটি যেন-তেন বাড়ি করে দিবেন না অনুগ্রহ করে । দোহাই আসুন সবাই মিলে একটা ভালো স্থাপনার চিন্তা করি।
চাই নির্মিত হোক সুন্দর একটি কমপ্লেক্স। এই জন্যে দরকার সহযোগিতা সরকারের - ভক্তদের- আপনাদের।
চাই নির্মাণ যেন হয় দৃষ্টিনন্দন, থাকে যেন ওপেন স্পেস কন্সেপ্ট। ইট পাথরে যেন খেয়ে না ফেলে নন্দন।
যেহেতু এঁরা গৃহী বাউল। তাই চাই বাউলদের থাকার জায়গা, মহড়া কক্ষ, একটি ছোট মিলনায়তনের মতো কক্ষ। আর দেশী বিদেশী অতিথিদের জন্যে থাকবার আশ্রয় / ডরমেটরি।
বাংলাদেশে অনেক সৃজনশীল স্থাপত্যবিদ আছেন। জানা মতে একজন ইতিমধ্যে এগিয়ে এসেছেন। প্রয়োজনে স্থাপত্যবিদ এর একটি টিম করা যেতে পারে। আর অর্থের যোগান হবে জনতার অনুদানে। ক্রাউড ফান্ড দিয়ে আজকাল বড় বড় কাজ হচ্ছে। এখন বাউলের জন্যে যে অর্থ তোলা হচ্ছে সেখানেও ইতিমধ্যে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে।
প্রিয় উচ্চ পদস্থ সরকারি আমলা বন্ধুরা এই বিষয়ে একটু সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দাও। স্থানীয় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার তো আছেনই।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস কমপ্লেক্স নির্মাণ অ-ধরা নয়।
সকলের আর্থিক সহযোগিতায় নির্মিত হতে পারে বাউল রণেশ ঠাকুরের জন্যে ছোট্ট একটি নান্দনিক আশ্রম-আখড়া।